১.
ওয়ান.... টু.... থ্রি.... ফোর....
-বাবু, এতো রাতে ছাদে কি কর?
-তারা গুনি পাপা!
-এতো রাতে? চল, ঘুমাতে চল।
সকালে স্কুলে যেতে হবে।
-পাপা, আর কিছুক্ষণ থাকি না,
প্লিজ!
-না। তাহলে সকালে ঘুম
থেকে উঠতে দেরি হয়ে যাবে। চল।
হাত ধরে নিচে নেমে যাচ্ছিলাম।
হাতটা ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে নিল।
কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না।
ওর দিকে তাকালাম। অভিমান করে গাল
ফুলিয়ে আছে!
হাসলাম। হাটু গেড়ে বসে বললাম,
"আই এম সরি, বাবু!"
ছোট্ট গালে টোল ফেলে হাসল।
জড়িয়ে ধরলাম আমার ছোট্ট
বাবুটাকে। আমার বেঁচে থাকার
একমাত্র অবলম্বন।
২.
বাপ-বেটা বসে তারা দেখতে লাগলাম।
রাতের আকাশের সেই চিরচেনা তারা।
-জানো পাপা, আমাদের ক্লাসের
অনিককে তার মাম্মি প্রতিদিন
রাতে তারা দেখাতে নিয়ে যায়। খুব
মজা করে ওরা। আমার তো মাম্মি নেই,
তাই আমি প্রতিদিন
তারা দেখতে পারিনা। তুমিও
নিয়ে আসনা।
চমকে উঠে ওর দিকে তাকালাম।
অনুযোগের সূরে আমার বাবুটা তার
একাকিত্বের কথা আমাকে জানান
দিচ্ছে। সত্যিই তো,
ওকে আমি কতটা সময় দিতে পারছি?
বুকের বাঁ পাশটা কেন
জানি মুচড়ে উঠল। চোখের
সামনে ভেসে উঠল নীলিমার
হাসিমাখা নিষ্পাপ মুখ।
৩.
-মেঘলা আপু, কমন রুমটা কোনদিকে?
-কমন রুম দিয়ে কি করবে?
-না মানে, অফ ক্লাস তো, তাই কমন
রুমে গিয়ে বসে থাকব।
-কমন রুমে যাওয়ার দরকার নেই।
এখানে বসে আড্ডা দাও।
-কিন্তু...
-কোন কিন্তু নেই। বস।
মেয়েটার দিকে তাকালাম। অপূর্ব
মায়াময় চেহারা। রুপ-লাবণ্যের
কমতি নেই। কয়টা ছেলে এর
পেছনে ঘুরে, আল্লাহ জানে।
-পরিচয় করিয়ে দিই। এর নাম মেঘ।
আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। আর মেঘ, ও হল
নীলিমা। খুব লাজুক মেয়ে। আমাদের
এক ব্যাচ জুনিয়র। আমাদের বাসার
পাশেই থাকে।
এভাবেই পরিচয়। এরপর
আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব, ভাললাগা,
ভালবাসা, তারপর প্রণয়।
ছোট্ট সংসার। আনন্দ-বেদনা, মান-
অভিমান মিলিয়ে নীলিমার
সাথে জীবনটা ভালই কাটছিল। এরই
মাঝে আমাদের ঘর আলো করে জন্ম নিল
ছোট্ট বাবুটা। সারাক্ষণ ব্যস্ত
রাখত আমাদের দুজনকেই।
সুখ ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু
সুখটা এত ক্ষণস্থায়ী, বুঝতেই
পারিনি।
সেদিন ছিল রবিবার। বাবুর
বায়না মেটাতে আমরা পার্কে গিয়েছি
পার্কে দূরন্ত বাবুর
সেকি ছুটাছুটি! ওকে ওর ইচ্ছামত
খেলতে দিয়ে আমি আর
নীলিমা গল্পে মেতে উঠলাম। হঠাত্
করে আবিষ্কার করলাম, বাবু
পার্কে নেই। পাগলের মত
খুজতে লাগলাম বাবুকে।
হঠাত্ দেখলাম, নীলিমা রাস্তার
দিকে ছুটছে। ওর পথ অনুসরণ
করে দেখলাম, ব্যস্ত রাস্তায়
খেলছে বাবু। আমিও
নীলিমাকে অনুসরণ করলাম।
নীলিমা দৌড়ে গিয়ে বাবুকে জড়িয়ে
ঠিক সেই মূহুর্তে উল্টো দিক
থেকে একটা ট্রাক
এসে নীলিমাকে ধাক্কা দিয়ে দ্রুত
চলে গেল।
মূহুর্তের জন্য হতবাক
হয়ে গেলাম।
দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম
রক্তমাখা নীলিমাকে।
নীলিমা তখনো শক্ত
করে বাবুকে জড়িয়ে ধরে আছে।
অস্পষ্ট হেসে অনেক কষ্ট করে বলল,
"আমার বাবুকে দেখে রেখো।"
৪.
-পাপা, তুমি বাচ্চা ছেলের মত
কাঁদো কেন?
বাবুর কথায় বাস্তবে ফিরে আসলাম।
চোখের পানি মুছে হাসার
চেষ্টা করলাম।
-আমি বাচ্চা ছেলে তো, তাই।
-তুমি বাচ্চা ছেলে না। তুমি অনেক
বড় হয়েছ।
-আচ্ছা, আর কাঁদব না। চল,
নিচে যায়। তোমার অনেক ঘুম
পাচ্ছে দেখছি।
বাবুকে কোলে তুলে নিলাম। বাবু
শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
ভেজা মুখটা তুলে আকাশের
দিকে তাকালাম। লক্ষ-কোটি তারার
মিটমিট আলোর
মধ্যে একটা তারাকে কেন জানি খুব
উজ্জ্বল মনে হল!
ওয়ান.... টু.... থ্রি.... ফোর....
-বাবু, এতো রাতে ছাদে কি কর?
-তারা গুনি পাপা!
-এতো রাতে? চল, ঘুমাতে চল।
সকালে স্কুলে যেতে হবে।
-পাপা, আর কিছুক্ষণ থাকি না,
প্লিজ!
-না। তাহলে সকালে ঘুম
থেকে উঠতে দেরি হয়ে যাবে। চল।
হাত ধরে নিচে নেমে যাচ্ছিলাম।
হাতটা ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে নিল।
কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না।
ওর দিকে তাকালাম। অভিমান করে গাল
ফুলিয়ে আছে!
হাসলাম। হাটু গেড়ে বসে বললাম,
"আই এম সরি, বাবু!"
ছোট্ট গালে টোল ফেলে হাসল।
জড়িয়ে ধরলাম আমার ছোট্ট
বাবুটাকে। আমার বেঁচে থাকার
একমাত্র অবলম্বন।
২.
বাপ-বেটা বসে তারা দেখতে লাগলাম।
রাতের আকাশের সেই চিরচেনা তারা।
-জানো পাপা, আমাদের ক্লাসের
অনিককে তার মাম্মি প্রতিদিন
রাতে তারা দেখাতে নিয়ে যায়। খুব
মজা করে ওরা। আমার তো মাম্মি নেই,
তাই আমি প্রতিদিন
তারা দেখতে পারিনা। তুমিও
নিয়ে আসনা।
চমকে উঠে ওর দিকে তাকালাম।
অনুযোগের সূরে আমার বাবুটা তার
একাকিত্বের কথা আমাকে জানান
দিচ্ছে। সত্যিই তো,
ওকে আমি কতটা সময় দিতে পারছি?
বুকের বাঁ পাশটা কেন
জানি মুচড়ে উঠল। চোখের
সামনে ভেসে উঠল নীলিমার
হাসিমাখা নিষ্পাপ মুখ।
৩.
-মেঘলা আপু, কমন রুমটা কোনদিকে?
-কমন রুম দিয়ে কি করবে?
-না মানে, অফ ক্লাস তো, তাই কমন
রুমে গিয়ে বসে থাকব।
-কমন রুমে যাওয়ার দরকার নেই।
এখানে বসে আড্ডা দাও।
-কিন্তু...
-কোন কিন্তু নেই। বস।
মেয়েটার দিকে তাকালাম। অপূর্ব
মায়াময় চেহারা। রুপ-লাবণ্যের
কমতি নেই। কয়টা ছেলে এর
পেছনে ঘুরে, আল্লাহ জানে।
-পরিচয় করিয়ে দিই। এর নাম মেঘ।
আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। আর মেঘ, ও হল
নীলিমা। খুব লাজুক মেয়ে। আমাদের
এক ব্যাচ জুনিয়র। আমাদের বাসার
পাশেই থাকে।
এভাবেই পরিচয়। এরপর
আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব, ভাললাগা,
ভালবাসা, তারপর প্রণয়।
ছোট্ট সংসার। আনন্দ-বেদনা, মান-
অভিমান মিলিয়ে নীলিমার
সাথে জীবনটা ভালই কাটছিল। এরই
মাঝে আমাদের ঘর আলো করে জন্ম নিল
ছোট্ট বাবুটা। সারাক্ষণ ব্যস্ত
রাখত আমাদের দুজনকেই।
সুখ ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু
সুখটা এত ক্ষণস্থায়ী, বুঝতেই
পারিনি।
সেদিন ছিল রবিবার। বাবুর
বায়না মেটাতে আমরা পার্কে গিয়েছি
পার্কে দূরন্ত বাবুর
সেকি ছুটাছুটি! ওকে ওর ইচ্ছামত
খেলতে দিয়ে আমি আর
নীলিমা গল্পে মেতে উঠলাম। হঠাত্
করে আবিষ্কার করলাম, বাবু
পার্কে নেই। পাগলের মত
খুজতে লাগলাম বাবুকে।
হঠাত্ দেখলাম, নীলিমা রাস্তার
দিকে ছুটছে। ওর পথ অনুসরণ
করে দেখলাম, ব্যস্ত রাস্তায়
খেলছে বাবু। আমিও
নীলিমাকে অনুসরণ করলাম।
নীলিমা দৌড়ে গিয়ে বাবুকে জড়িয়ে
ঠিক সেই মূহুর্তে উল্টো দিক
থেকে একটা ট্রাক
এসে নীলিমাকে ধাক্কা দিয়ে দ্রুত
চলে গেল।
মূহুর্তের জন্য হতবাক
হয়ে গেলাম।
দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম
রক্তমাখা নীলিমাকে।
নীলিমা তখনো শক্ত
করে বাবুকে জড়িয়ে ধরে আছে।
অস্পষ্ট হেসে অনেক কষ্ট করে বলল,
"আমার বাবুকে দেখে রেখো।"
৪.
-পাপা, তুমি বাচ্চা ছেলের মত
কাঁদো কেন?
বাবুর কথায় বাস্তবে ফিরে আসলাম।
চোখের পানি মুছে হাসার
চেষ্টা করলাম।
-আমি বাচ্চা ছেলে তো, তাই।
-তুমি বাচ্চা ছেলে না। তুমি অনেক
বড় হয়েছ।
-আচ্ছা, আর কাঁদব না। চল,
নিচে যায়। তোমার অনেক ঘুম
পাচ্ছে দেখছি।
বাবুকে কোলে তুলে নিলাম। বাবু
শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
ভেজা মুখটা তুলে আকাশের
দিকে তাকালাম। লক্ষ-কোটি তারার
মিটমিট আলোর
মধ্যে একটা তারাকে কেন জানি খুব
উজ্জ্বল মনে হল!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন