খুবই আজব লাগছিল যখন আমার বিয়ে ঠিক হল। অচেনা একজন এর সাথে বাকিটা জীবন কাটাতে হবে। বাবা-মা এর পছন্দ মতই বিয়ে হয় আমার। দেখতে তেমন ভাল ছিলাম না বলে প্রেম করার সৌভাগ্য হয়নি কখনো। যেদিন আমাকে দেখতে আসে, ছেলেকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে আমাকে ওদের পছন্দ হবে না। কারন ছেলে অনেক সুন্দর। সবথেকে বড়ো কারন হল আমি অনেক কালো। আমাকে কন ...ছেলেই পছন্দ করে না। করবে এমনটি আশাও করি নি।যখন খবর আসলো যে ছেলেআমাকে পছন্দ করেছে, খুব অবাক হলাম।
বিয়ের দিন সবাই আমাকে বাসর রাত এর ব্যাপারে জ্ঞান দিচ্ছিল। আমার খুব অস্বস্তি লাগছিল। আমি খুব শান্ত-শিষ্ট একটা মেয়ে। খুব কম কথা বলি। বাসর ঘরে আমি খুব ভয় এ ছিলাম। সারাদিন বিয়ের ধকল যাউয়াতে অনেক ক্লান্ত ও ছিলাম। ও যখন ঘরে ঢুকল, হটাত হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। কিন্তু কাছে আসার পর সে যা বলল, সেটা শুনে আমি অভিভুত হয়ে গেলাম। সে বলল “তুমি নিশ্চই অনেক ক্লান্ত। খাউয়ার সময় ও বেশি কিছু খেতে পারনি দেখলাম। এখন কিছু খাবে?” আমি না বললাম। সে বলল “আচ্ছা, তাহলে শুয়ে পড়।” তার প্রতি অন্যরকম এক ভাললাগা আমার উপর ভর করে। সম্মানবোধ করি তার প্রতি। কারন সে আমাকে হয়ত বুঝতে পেরেছে।
পরদিন সকালে নাশতার পর আমি আলমারি গুছাচ্ছিলাম। সে হটাত পেছন থেকে এসে আমাকে এমনভাবে জরিয়ে ধরল, যেন সে আমার কতকালের চেনা। তখন একইসাথে ভাল লাগা এবং একরকম নতুনত্ব অনুধাবন করি। আমি সবসময় চুপচাপ থাকতাম। সে আমাকে সবসময় খুশি রাখার চেষ্টা করত। তার বাবা-মা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। কোন ভাইবন ও নেই। এই দুনিয়া তে আমি ছাড়া তার আপন কেও নেই। একদিন রাত এ আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। অন্ধকারেও বুঝতে পারি যা তার চোখে পানি। সে আস্তে করে আমাকে বলছে “আমাকে কখন ছেড়ে যেও না। তুমি ছাড়া ত আমার আর কেও নেই।” সেদিন আমি মনে মনে তার কাছে প্রতিজ্ঞা করি যে আমি কখনো তাকে ছেড়ে যাব না।
অফিস থেকে আমাকে প্রতিদিন ফোন করে জিজ্ঞেস করত আমি খেয়েছি কিনা। আমি জানি যে আমি না খেলে সেও খাবে না। তার সম্পূর্ণ জগত ছিলাম আমি। অবশ্য আমার প্রতি তার অনেক অভিযোগ ছিল। কারন আমি কখনই তার সাথে ফ্রী হয়ে কথা বলি না। সবসময়ই জড়তা থাকে। আমি নিজেও সেটা বুঝি। কিন্তু জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারি না। তবে প্রায়ই কেন যেন মনে হতে লাগল আমি তাকে অনেকদিন থেকে চিনি। কোথায় যেন দেখেছি তাকে,বেশ আগে। কিন্তু কিছু মনে করতে পারি না।
আমাদের বিয়ে হয়েছিল ডিশেম্বার মাসে।পরের বছর ১৪ই জানুয়ারিতে আমার জন্য বিশাল এক চমক অপেক্ষা করছিল। সে আমাকে ফোন করে আমার ছোটবেলার স্কুল এর সামনে আসতে বলে। আমি অবাক হয়ে জাই। তারপরও গেলাম। গিয়ে দেখি সেখানে সে হাতে একটি জংলি ফুল নিয়ে আমার কাছে আসছে। দৃশ্যটি খুব পরিচিত মনে হল। কাছে এসে সে বলল “আমি তমাকে ভালবাসি। তুমিও আমাকে ভালো না বাসলে আমি গাড়ির নিচে পড়ে আত্মহত্যা করব।”
আমার হটাত সবকিছু মনে পড়ে। ঠিক এই ঘটনাটি আমার জিবনে ঘটেছিল ১৪ বছর আগে। ক্লাস সিক্স এ পরতাম আমি। একদিন বেশ সুন্দর একটি ছেল এসে আমাকে ঠিক এভাবেই প্রপোজ করেছিল। আগেই বলেছি আমি বেশ কালো। তাই এত সুন্দর একটি ছেলে আমাকে প্রেম নিবেদন করায় আমি অনেক খুশি হয়ে যাই। ছেলেতি আমার দিকে এক্তি জংলি ফুল এগিয়ে দেয়। অনেক লাজুক হউয়া সত্ত্বেও আমি ফুলটি হাতে নেই। হাতে নেয়ার সময় সে আমাকে বলে ফুল হাতে নিয়ে ফেলে দিলে সে আত্মহত্যা করবে। ফুল হাতে নেয়ার পর আমি দেখতে পাই ফুল এর ভেতরে এক ভয়ঙ্কর পতঙ্গ। দেখে আমি ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু তবুও আমি হাত থেকে ফুল ফেলি নি এই ভয় এ যে সে যদি আমাকে ভুল বুঝে আত্মহত্যা করে! হয়ত সে জানেও না যে ফুল এর মাঝে একটি কুৎসিত পতঙ্গ আছে।
কিছুক্ষণ পর তার বন্ধুরা হাসতে হাসতে বের হয়। পরে বুঝতে পারি, তারা শুধু মজা করার জন্য এই কাজটি করেছে। তাদের মধ্যে একজন বলে ওঠে “পোকাটা দেখতে ঠিক তোমার মত,তাই না?” প্রচণ্ড অপমানিত হই আমি। সেই ছেলেটিও বলে ওঠে “তুমি কি মনে করেছিলে, তোমার মতো মেয়েকে আমি ভালবাসবো!!!” আমার চোখ ফেতে সেদিন অঝোরে অশ্রু ঝরেছিল।
বুঝতে পারলাম, সেই ছেলেটি এখন আমার স্বামী। সে বলল, “সেদিন তোমার সাথে যে খারাপ ব্যাবহার আমি করেছি, তার ফলও ভোগ করেছি। এক সুন্দরী মেয়েকে আমি অনেক ভালবাসতাম। আমাদের মাঝে সম্পর্কও ছিল। একদিন একটা এক্সিডেন্ট এ আমার পা এর হাড় ভেঙ্গে যায়। ডাক্তার বলেছিল থিক হয়ে যাবে কিন্তু সময় লাগবে। আমি দুষ্টুমি করে ওই মেয়েকে বললাম যে আমার পা আর কখনও ভাল হবে না। তারপর খেয়াল করলাম ও আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। একদিন আমাকে সে বলল যে সে পঙ্গু একজনের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারবে না। সেদিন আমি তাকে বলতে চেয়েছিলাম যে আমি আসলে ঠিক আছি। কিন্তু আর বললাম না। সেদিন কেন যেন বারবার আমার তোমার কথা মনে হচ্ছিল। তোমার কান্নামাখা মুখটি বারবার চোখ এর সামনে ভেসে উঠছিল। সেদিন আমি ঠিক করলাম যে আমি তোমাকেই বিয়ে করব। অনেক কষ্টে তোমাকে খুঁজে বের করলাম।বিয়ে করলাম। ভেবেছিলাম আগে প্রপোজ করে পরে বিয়ে করব। কিন্তু তোমার ফ্যামিলি তাড়াতাড়ি তোমার বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল। যদি অন্য কারও সাথে তোমার বিয়ে হয়ে যায় সেই ভয়ে আগে বিয়ে করে নিলাম। আজ সেই ঘটনার ঠিক ১৪ বছর সেই একই দিনে আমি তোমাকে আবারো প্রপোজ করছি। এবার মন থেকে। ফুলটি নাও। না নিলে আমি গারির নিচে পড়ে আত্মহত্যা করব।”
আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। সে বলল “ভয় নেই, এবার কোন কুৎসিত পোকা নেই ফুলটিতে।” আমি তাকিয়ে ভাবতে থাকলাম, ফুলটি কি নেব কি না।
আপনাদের কি মনে হয়? নেয়া উচিত হবে?যদি নিই তাহলে বাকি জীবন সুখের হবে। যদি না নিই, তবে কি হবে আমি নিজেও জানি না
বিয়ের দিন সবাই আমাকে বাসর রাত এর ব্যাপারে জ্ঞান দিচ্ছিল। আমার খুব অস্বস্তি লাগছিল। আমি খুব শান্ত-শিষ্ট একটা মেয়ে। খুব কম কথা বলি। বাসর ঘরে আমি খুব ভয় এ ছিলাম। সারাদিন বিয়ের ধকল যাউয়াতে অনেক ক্লান্ত ও ছিলাম। ও যখন ঘরে ঢুকল, হটাত হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। কিন্তু কাছে আসার পর সে যা বলল, সেটা শুনে আমি অভিভুত হয়ে গেলাম। সে বলল “তুমি নিশ্চই অনেক ক্লান্ত। খাউয়ার সময় ও বেশি কিছু খেতে পারনি দেখলাম। এখন কিছু খাবে?” আমি না বললাম। সে বলল “আচ্ছা, তাহলে শুয়ে পড়।” তার প্রতি অন্যরকম এক ভাললাগা আমার উপর ভর করে। সম্মানবোধ করি তার প্রতি। কারন সে আমাকে হয়ত বুঝতে পেরেছে।
পরদিন সকালে নাশতার পর আমি আলমারি গুছাচ্ছিলাম। সে হটাত পেছন থেকে এসে আমাকে এমনভাবে জরিয়ে ধরল, যেন সে আমার কতকালের চেনা। তখন একইসাথে ভাল লাগা এবং একরকম নতুনত্ব অনুধাবন করি। আমি সবসময় চুপচাপ থাকতাম। সে আমাকে সবসময় খুশি রাখার চেষ্টা করত। তার বাবা-মা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। কোন ভাইবন ও নেই। এই দুনিয়া তে আমি ছাড়া তার আপন কেও নেই। একদিন রাত এ আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। অন্ধকারেও বুঝতে পারি যা তার চোখে পানি। সে আস্তে করে আমাকে বলছে “আমাকে কখন ছেড়ে যেও না। তুমি ছাড়া ত আমার আর কেও নেই।” সেদিন আমি মনে মনে তার কাছে প্রতিজ্ঞা করি যে আমি কখনো তাকে ছেড়ে যাব না।
অফিস থেকে আমাকে প্রতিদিন ফোন করে জিজ্ঞেস করত আমি খেয়েছি কিনা। আমি জানি যে আমি না খেলে সেও খাবে না। তার সম্পূর্ণ জগত ছিলাম আমি। অবশ্য আমার প্রতি তার অনেক অভিযোগ ছিল। কারন আমি কখনই তার সাথে ফ্রী হয়ে কথা বলি না। সবসময়ই জড়তা থাকে। আমি নিজেও সেটা বুঝি। কিন্তু জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারি না। তবে প্রায়ই কেন যেন মনে হতে লাগল আমি তাকে অনেকদিন থেকে চিনি। কোথায় যেন দেখেছি তাকে,বেশ আগে। কিন্তু কিছু মনে করতে পারি না।
আমাদের বিয়ে হয়েছিল ডিশেম্বার মাসে।পরের বছর ১৪ই জানুয়ারিতে আমার জন্য বিশাল এক চমক অপেক্ষা করছিল। সে আমাকে ফোন করে আমার ছোটবেলার স্কুল এর সামনে আসতে বলে। আমি অবাক হয়ে জাই। তারপরও গেলাম। গিয়ে দেখি সেখানে সে হাতে একটি জংলি ফুল নিয়ে আমার কাছে আসছে। দৃশ্যটি খুব পরিচিত মনে হল। কাছে এসে সে বলল “আমি তমাকে ভালবাসি। তুমিও আমাকে ভালো না বাসলে আমি গাড়ির নিচে পড়ে আত্মহত্যা করব।”
আমার হটাত সবকিছু মনে পড়ে। ঠিক এই ঘটনাটি আমার জিবনে ঘটেছিল ১৪ বছর আগে। ক্লাস সিক্স এ পরতাম আমি। একদিন বেশ সুন্দর একটি ছেল এসে আমাকে ঠিক এভাবেই প্রপোজ করেছিল। আগেই বলেছি আমি বেশ কালো। তাই এত সুন্দর একটি ছেলে আমাকে প্রেম নিবেদন করায় আমি অনেক খুশি হয়ে যাই। ছেলেতি আমার দিকে এক্তি জংলি ফুল এগিয়ে দেয়। অনেক লাজুক হউয়া সত্ত্বেও আমি ফুলটি হাতে নেই। হাতে নেয়ার সময় সে আমাকে বলে ফুল হাতে নিয়ে ফেলে দিলে সে আত্মহত্যা করবে। ফুল হাতে নেয়ার পর আমি দেখতে পাই ফুল এর ভেতরে এক ভয়ঙ্কর পতঙ্গ। দেখে আমি ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু তবুও আমি হাত থেকে ফুল ফেলি নি এই ভয় এ যে সে যদি আমাকে ভুল বুঝে আত্মহত্যা করে! হয়ত সে জানেও না যে ফুল এর মাঝে একটি কুৎসিত পতঙ্গ আছে।
কিছুক্ষণ পর তার বন্ধুরা হাসতে হাসতে বের হয়। পরে বুঝতে পারি, তারা শুধু মজা করার জন্য এই কাজটি করেছে। তাদের মধ্যে একজন বলে ওঠে “পোকাটা দেখতে ঠিক তোমার মত,তাই না?” প্রচণ্ড অপমানিত হই আমি। সেই ছেলেটিও বলে ওঠে “তুমি কি মনে করেছিলে, তোমার মতো মেয়েকে আমি ভালবাসবো!!!” আমার চোখ ফেতে সেদিন অঝোরে অশ্রু ঝরেছিল।
বুঝতে পারলাম, সেই ছেলেটি এখন আমার স্বামী। সে বলল, “সেদিন তোমার সাথে যে খারাপ ব্যাবহার আমি করেছি, তার ফলও ভোগ করেছি। এক সুন্দরী মেয়েকে আমি অনেক ভালবাসতাম। আমাদের মাঝে সম্পর্কও ছিল। একদিন একটা এক্সিডেন্ট এ আমার পা এর হাড় ভেঙ্গে যায়। ডাক্তার বলেছিল থিক হয়ে যাবে কিন্তু সময় লাগবে। আমি দুষ্টুমি করে ওই মেয়েকে বললাম যে আমার পা আর কখনও ভাল হবে না। তারপর খেয়াল করলাম ও আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। একদিন আমাকে সে বলল যে সে পঙ্গু একজনের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারবে না। সেদিন আমি তাকে বলতে চেয়েছিলাম যে আমি আসলে ঠিক আছি। কিন্তু আর বললাম না। সেদিন কেন যেন বারবার আমার তোমার কথা মনে হচ্ছিল। তোমার কান্নামাখা মুখটি বারবার চোখ এর সামনে ভেসে উঠছিল। সেদিন আমি ঠিক করলাম যে আমি তোমাকেই বিয়ে করব। অনেক কষ্টে তোমাকে খুঁজে বের করলাম।বিয়ে করলাম। ভেবেছিলাম আগে প্রপোজ করে পরে বিয়ে করব। কিন্তু তোমার ফ্যামিলি তাড়াতাড়ি তোমার বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল। যদি অন্য কারও সাথে তোমার বিয়ে হয়ে যায় সেই ভয়ে আগে বিয়ে করে নিলাম। আজ সেই ঘটনার ঠিক ১৪ বছর সেই একই দিনে আমি তোমাকে আবারো প্রপোজ করছি। এবার মন থেকে। ফুলটি নাও। না নিলে আমি গারির নিচে পড়ে আত্মহত্যা করব।”
আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। সে বলল “ভয় নেই, এবার কোন কুৎসিত পোকা নেই ফুলটিতে।” আমি তাকিয়ে ভাবতে থাকলাম, ফুলটি কি নেব কি না।
আপনাদের কি মনে হয়? নেয়া উচিত হবে?যদি নিই তাহলে বাকি জীবন সুখের হবে। যদি না নিই, তবে কি হবে আমি নিজেও জানি না
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন