সকাল ১০টা । নাভিদের মাত্রই ঘুম ভাঙল । মোবাইল ফোনটা বেজেই চলছে। নাভিদ খানিকটা বিরক্ত হলো । রূপার ফোন ।রূপা তো কখনও ঘুম ভাঙানোর জন্য ফোন করে না । কি ব্যাপার ? নাভিদ ঘুম জরিত কণ্ঠে বলল ,রূপা,বল কি ব্যাপার ? ওপাশ থেকে রূপার মিষ্টি গলা শোনা গেল ,তুই কি আজকে বিকালে একটু আসতে পারবি? তোর সাথে জরুরি কথা ছিল ?
নাভিদ বলল, আমার ৩টার দিকে একটা ক্লাস আছে। ক্লাস শেষে দেখা করি? রূপা বলল, ঠিক আছে,রাখি। রূপা ফোন রেখে দিলেও নাভিদ বেশ খানিকটা সময় ফোনটা ধরে রইল ।এই ব্যাপারটা বেশ কিছু দিন ধরেই হচ্ছে । যে কাজগুলোকে আগে ছেলেমানুষী মনে হতো নাভিদ সেই কাজ গুলিই করছে । এইতো সেদিন রূপা খানিকটা জোর করতেই নাভিদ ওর সাথে ফুচকা খেতে চলে গেল । তারপর রিক্সার হুড ফেলে বৃষ্টিতে ভিজে ঠাণ্ডা লাগালো ।
নাভিদ কিছুতেই ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছে না । বারবার মনে হচ্ছে রূপার কি এমন জরুরি কথা থাকতে পারে ওর সাথে । ওর নিজের উপর খুব রাগ লাগছে । কি হচ্ছে এ সব তার সাথে ? রূপা কে কি সে অন্য দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করেছে ? কিন্তু প্রেম – ভালবাসা এইসব তো তার কাছে সব সময় ন্যাকামীই মনে হয়েছে। প্রেম করলে ডেটিং এ যেতে হবে , গার্লফ্রেন্ডকে নিত্যনতুন উপহার দিতে হবে , আবার সারারাত ফোনে কথা বলে শান্তির ঘুমটাও নষ্ট করতে হবে । এইসব ঝামেলার কথা চিন্তা করে নাভিদ সব সময় প্রেম থেকে ১০০ হাত দূরে থেকেছে । তবে সেই প্রেমই শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রাস করল । নাভিদ ঠিক করলো যেভাবেই হোক এই প্রেম প্রেম ভাবটাকে মন থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে ।
ক্লাস শেষে নাভিদ রূপাকে ফোন দিয়ে বলল যে তার শরীর খারাপ । আজকে আসতে পারবে না । রূপা কিছু বলার আগেই সে ফোন রেখে দিলো । তার পরপরই নাভিদের প্রচণ্ড মন খারাপ হয়ে গেল । সে আই কাজটা কেন করলো ? শরীরের তো এমন কিছু হয় নাই । সে তো রূপার সাথে দেখা করতেই পারত ।
বাসায় আসতেই রূপার ফোন এল । নাভিদ প্রায় ঝাঁপিয়ে পরে ফোন ধরলো । রূপা বলল , আমি তোর বাসার পাশের কফি শপে আছি । চলে আয় । নাভিদ ঘর থেকে ছুটে বের হয়ে গেল । রূপা কোণার দিকের একটা টেবিলে বসে আছে । নাভিদ বলল , বল তোর জরুরি কথা । রূপা বলল আজকে এম্নি গল্প করতে তোকে ডেকেছি । অন্যদিন জরুরি কথা বলবো । নাভিদ বলল, আমার একটু কাজ ছিল ।এখন গল্প করতে পারব না । রূপা সাথে সাথে বলল , ঠিক আছে । আমি তাহলে উঠি । বলেই উঠে পড়লো । তারপর গটগট করে হেঁটে চলে গেল । নাভিদ ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিজের অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো ।
নাভিদের দিনগুলি ইদানিং অনেক কঠিন হয়ে উঠেছে । সারাক্ষণই ওর মন খারাপ থাকে আর এটাকে আবার ও সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে । মাঝে মাঝেই ফোন হাতে নেয় রুপাকে ফোন দেয়ার জন্য । কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেয়া হয় না ।
হঠাৎ করে ফোনটা বেজে উঠলো । রূপার ফোন । নাভিদ ফোনটা ধরে কোন কথা বলতে পারলো না । ওর ভেতরটা যেন কেঁপে কেঁপে উঠছে । ওপাশ থেকে রূপা বলল , কাল একবার আমার সাথে দেখা করবি ? নাভিদ বলল , ঠিক আছে ।
নাভিদ সময়ের আগেই চলে এসেছে । একটু পর রূপা আসলো । নাভিদ বলল । কেমন আছিস ? রপা বলল , ভাল । তোকে একটা সুখবর দিতে এসেছি । সামনের সপ্তাহে আমার বিয়ে । নাভিদের মুখে মুহূর্তেই বিষাদের একটা ছাঁয়া পরলো । শুধু বলল , ভাল তো । রূপা বলল , আমি যাই । কার্ড পাঠবো । আসিস কিন্তু । তোর জন্য একটা জিনিস আছে । তোকে একটা চিঠি লিখেছি । তোর বাসায় একটা বই পাঠিয়েছি । বইটার মধ্যে আছে ।
নাভিদের মাথা এলোমেলো হয়ে গেছে । রূপার বিয়ে তো হতেই পারে । সে তো আর রূপাকে কিছু বলেনি । তাহলে আজকে এতো খারাপ লাগছে কেন ?
নাভিদ পরের দিনই ওর দাদাবাড়ি চলে এসেছে । চিঠিটা এখনও পড়া হয়নি । এটাই হয়তো রূপার শেষ চিঠি ।
এখন মধ্যরাত । নাভিদ রূপার চিঠিটা পড়তে শুরু করলো ।
নাভিদ ,
প্রেম – ভালবাসা এইসব কে যে তুই আদিখ্যেতা আর ন্যাকামী মনে করিস তা আমি ভাল করেই জানি । কিন্তু যেদিন থেকে দেখলাম তুই এই ন্যাকামিগুলো আমার সাথে করতে শুরু করেছিস আমার কি যে ভাল লাগলো তোকে বলে বোঝাতে পারব না । বুঝলাম , তুইও আমার প্রেমে পরেছিস । কিন্তু তুই এইটা আমাকে বললি তো নাই , উল্টা আমাকে ইগনোর করতে শুরু করলি । তুই কি জানিস তোর চোখ সব কিছু বলে দেয় ? যাই হোক ,আমি কিন্তু তোকে একটা মিথ্যা কথা বলেছি । বিয়েটা আমার না , আমার বড় আপুর । কি এখন নিশ্চয় একটু হলেও হারানোর কষ্টটা বুঝতে পারছিস ? আমার বিয়ের খবর শুনে নিশ্চয় তুই দূরে কোথাও চলে গেছিস।আমি কিন্তু তোর জন্য অপেক্ষা করছি , সারাজীবন করবো ।
ইতি,
রূপা
মাত্রই ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে । নাভিদ যাচ্ছে স্টেশনের দিকে । প্রথম ট্রেনেই ওকে ঢাকা যেতে হবে । রূপা অপেক্ষা করছে ।
নাভিদ বলল, আমার ৩টার দিকে একটা ক্লাস আছে। ক্লাস শেষে দেখা করি? রূপা বলল, ঠিক আছে,রাখি। রূপা ফোন রেখে দিলেও নাভিদ বেশ খানিকটা সময় ফোনটা ধরে রইল ।এই ব্যাপারটা বেশ কিছু দিন ধরেই হচ্ছে । যে কাজগুলোকে আগে ছেলেমানুষী মনে হতো নাভিদ সেই কাজ গুলিই করছে । এইতো সেদিন রূপা খানিকটা জোর করতেই নাভিদ ওর সাথে ফুচকা খেতে চলে গেল । তারপর রিক্সার হুড ফেলে বৃষ্টিতে ভিজে ঠাণ্ডা লাগালো ।
নাভিদ কিছুতেই ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছে না । বারবার মনে হচ্ছে রূপার কি এমন জরুরি কথা থাকতে পারে ওর সাথে । ওর নিজের উপর খুব রাগ লাগছে । কি হচ্ছে এ সব তার সাথে ? রূপা কে কি সে অন্য দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করেছে ? কিন্তু প্রেম – ভালবাসা এইসব তো তার কাছে সব সময় ন্যাকামীই মনে হয়েছে। প্রেম করলে ডেটিং এ যেতে হবে , গার্লফ্রেন্ডকে নিত্যনতুন উপহার দিতে হবে , আবার সারারাত ফোনে কথা বলে শান্তির ঘুমটাও নষ্ট করতে হবে । এইসব ঝামেলার কথা চিন্তা করে নাভিদ সব সময় প্রেম থেকে ১০০ হাত দূরে থেকেছে । তবে সেই প্রেমই শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রাস করল । নাভিদ ঠিক করলো যেভাবেই হোক এই প্রেম প্রেম ভাবটাকে মন থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে ।
ক্লাস শেষে নাভিদ রূপাকে ফোন দিয়ে বলল যে তার শরীর খারাপ । আজকে আসতে পারবে না । রূপা কিছু বলার আগেই সে ফোন রেখে দিলো । তার পরপরই নাভিদের প্রচণ্ড মন খারাপ হয়ে গেল । সে আই কাজটা কেন করলো ? শরীরের তো এমন কিছু হয় নাই । সে তো রূপার সাথে দেখা করতেই পারত ।
বাসায় আসতেই রূপার ফোন এল । নাভিদ প্রায় ঝাঁপিয়ে পরে ফোন ধরলো । রূপা বলল , আমি তোর বাসার পাশের কফি শপে আছি । চলে আয় । নাভিদ ঘর থেকে ছুটে বের হয়ে গেল । রূপা কোণার দিকের একটা টেবিলে বসে আছে । নাভিদ বলল , বল তোর জরুরি কথা । রূপা বলল আজকে এম্নি গল্প করতে তোকে ডেকেছি । অন্যদিন জরুরি কথা বলবো । নাভিদ বলল, আমার একটু কাজ ছিল ।এখন গল্প করতে পারব না । রূপা সাথে সাথে বলল , ঠিক আছে । আমি তাহলে উঠি । বলেই উঠে পড়লো । তারপর গটগট করে হেঁটে চলে গেল । নাভিদ ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিজের অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো ।
নাভিদের দিনগুলি ইদানিং অনেক কঠিন হয়ে উঠেছে । সারাক্ষণই ওর মন খারাপ থাকে আর এটাকে আবার ও সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে । মাঝে মাঝেই ফোন হাতে নেয় রুপাকে ফোন দেয়ার জন্য । কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেয়া হয় না ।
হঠাৎ করে ফোনটা বেজে উঠলো । রূপার ফোন । নাভিদ ফোনটা ধরে কোন কথা বলতে পারলো না । ওর ভেতরটা যেন কেঁপে কেঁপে উঠছে । ওপাশ থেকে রূপা বলল , কাল একবার আমার সাথে দেখা করবি ? নাভিদ বলল , ঠিক আছে ।
নাভিদ সময়ের আগেই চলে এসেছে । একটু পর রূপা আসলো । নাভিদ বলল । কেমন আছিস ? রপা বলল , ভাল । তোকে একটা সুখবর দিতে এসেছি । সামনের সপ্তাহে আমার বিয়ে । নাভিদের মুখে মুহূর্তেই বিষাদের একটা ছাঁয়া পরলো । শুধু বলল , ভাল তো । রূপা বলল , আমি যাই । কার্ড পাঠবো । আসিস কিন্তু । তোর জন্য একটা জিনিস আছে । তোকে একটা চিঠি লিখেছি । তোর বাসায় একটা বই পাঠিয়েছি । বইটার মধ্যে আছে ।
নাভিদের মাথা এলোমেলো হয়ে গেছে । রূপার বিয়ে তো হতেই পারে । সে তো আর রূপাকে কিছু বলেনি । তাহলে আজকে এতো খারাপ লাগছে কেন ?
নাভিদ পরের দিনই ওর দাদাবাড়ি চলে এসেছে । চিঠিটা এখনও পড়া হয়নি । এটাই হয়তো রূপার শেষ চিঠি ।
এখন মধ্যরাত । নাভিদ রূপার চিঠিটা পড়তে শুরু করলো ।
নাভিদ ,
প্রেম – ভালবাসা এইসব কে যে তুই আদিখ্যেতা আর ন্যাকামী মনে করিস তা আমি ভাল করেই জানি । কিন্তু যেদিন থেকে দেখলাম তুই এই ন্যাকামিগুলো আমার সাথে করতে শুরু করেছিস আমার কি যে ভাল লাগলো তোকে বলে বোঝাতে পারব না । বুঝলাম , তুইও আমার প্রেমে পরেছিস । কিন্তু তুই এইটা আমাকে বললি তো নাই , উল্টা আমাকে ইগনোর করতে শুরু করলি । তুই কি জানিস তোর চোখ সব কিছু বলে দেয় ? যাই হোক ,আমি কিন্তু তোকে একটা মিথ্যা কথা বলেছি । বিয়েটা আমার না , আমার বড় আপুর । কি এখন নিশ্চয় একটু হলেও হারানোর কষ্টটা বুঝতে পারছিস ? আমার বিয়ের খবর শুনে নিশ্চয় তুই দূরে কোথাও চলে গেছিস।আমি কিন্তু তোর জন্য অপেক্ষা করছি , সারাজীবন করবো ।
ইতি,
রূপা
মাত্রই ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে । নাভিদ যাচ্ছে স্টেশনের দিকে । প্রথম ট্রেনেই ওকে ঢাকা যেতে হবে । রূপা অপেক্ষা করছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন