শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৩

আমার জীবনের প্রথম টিউশনি শুরু
করেছিলাম এক বড়ভাই এর সোর্সে।
মহসিন হল থেকে বাসাবো, সপ্তাহে ৩
দিন, ভার্সিটি এডমিসনের মেয়ে।
আন্টি শুধু বলেছিল “মার, কাট তোমার
ব্যাপার,
আমি মেয়েকে ঢাবিতে পড়াতে চাই।

সেদিন একটু কনফিউসড হয়ে গেসিলাম,
টাকা কামাইতে যায়ে কি আমাকে এতটা
পড়ানো শুরু করতেই নাস্তা চলে আসল।
প্রথম দিনই ম্যাগি নুডুলস ।

এর পর
চা এর সাথে বিস্কিট, পুরি, সিঙ্গারা,
পিঠা সবই আসত। আমার
ছোটবেলা থেকে ই চেটেপুটে খাওয়ার
অভ্যাস। ভাবতাম
ভদ্রতা করে রেখে দিলে হয়ত খাবার
নষ্ট হবে। ছাত্রীকে প্রথম
দিকে সাধতাম, খেতনা। তাই পরের
দিকে নিজেই পুরোটা খেতাম ।

একদিন খেয়াল করলাম নাস্তার
পরিমান বেড়ে গেছে । খেলাম
পুরোটাই। এর পর
থেকে যেভাবে পরিমাণ
টা বাড়তে থাকল , তাকে আর
নাস্তা বলা চলেনা। একে তো ৫০০০
টাকার টিউশনি, তার উপরে নাস্তার
এমন বাহার।
খুশিতে মাঝে মাঝে রিক্সাতে করে পড়া
। তো একদিন ছাত্রীকে অঙ্ক
করতে দিয়ে এক প্যাকেট টিপ বিস্কিট
আর চা দিয়ে শুরু করেছি আমার নাস্তার
পর্ব। আমি বিস্কিটে প্রথম বাইট
দিয়েছি মাত্র, দেখে ছাত্রী ফিক
করে হেসে দিল , দেখে তো আমার
মুখ দিয়ে আর বিস্কিট ঢুকেনা।
আমি তো ধরেই নিসি কিছু গরবর হইসে।

সেতো কিছুতেই বলবেনা হাসির কারণ।
আমিও খাবার নিয়ে ট্রাম্প করলাম,
না বললে খাবই না। এবার ললনা মুখ
খুলল, আমি নাকি অনেক সুন্দর করে খাই,
একটু ও খাবার রেখে দেইনা,
এটা আন্টি অনেক পছন্দ করে।

একথা শুনে তো কান দিয়ে ধুয়া বাইর
হইতে শুরু করসে আমার । বুঝলাম
আমার নাস্তার পরিমান বেড়ে কেন
ডিনারের পর্যায়ে গেসে।

আমি আস্তে করে বললাম অংক টা শেষ
করেন, আর আধা খাওয়া বিস্কিট টা শেষ
করে অন্য দিকে চেয়ে থাকলাম,
মাথা তো পুরাই হেং খাইছে।

এটা দেখে ছাত্রী ও ভয় পায়ে গেসে,
বলে “ভাইয়া প্লিজ আপনি খাবার শেষ
করেন, নাহলে আম্মু ভাববে আমি কিছু
বলেছি আপনাকে”। ছাত্রীকে বাঁচানোর
জন্য ই ছোট ছোট বাইটে শেষ করলাম
বাকিটা। ভাগ্যিস
আন্টি এটা দেখতে চায়নি যে আমি কতটা খাই
। আমি তার স্নেহের মান
রাখতে পেরেছিলাম, আমার ছাত্রী এখন
ঢাবির পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনে র
স্টুডেন্ট।

মোরালঃ নাস্তাই সফলতার চাবিকাঠি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

srabon204